অনেকেই আজকাল পোষাপ্রাণী হিসেবে বিড়ালকে নির্বাচন করছেন। লালন পালনে সুবিধা এবং দেখতে খুব সুন্দর এবং আদুরে এই প্রাণীটি একটু খাবার এবং আশ্রয় পেলেই সহজে পোষ মেনে যায়। আপনার প্রিয় বিড়ালটি অসুস্থ যাতে না হয় সে দিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখবেন বিড়াল খুব সংবেদনশীল প্রাণী, একটু অসুস্থতায় তাদের মৃত্যু হতে পারে। তাই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে আপনি এবং আপনার প্রিয় বন্ধুটি বিভিন্ন অসুস্থতার থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
১। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিকভাবেই বিড়াল পরিস্কার থাকতে পছন্দ করে। বিড়ালকে Pee ও Poop করার ভাল একটা ব্যবস্থা করে দিতে হবে এবং নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে। টয়লেট, কাগজ অথবা লিটার স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি। বালি এবং মাটি না দেয়াই ভাল, এতে প্রচুর ক্রিমির ডিম থাকে।
২। প্রতিবার লিটার বক্স পরিস্কার Poop গুলো দূরে ফেলে দিতে হবে এবং শেষে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।
৩। বিড়ালকে Tick & Flea এবং কৃমিমুক্ত রাখতে হবে। এই Tick & Flea এবং কৃমি বিড়ালের মধ্যে রোগ বহন করে থাকে।
৪। মাসে অন্তত একদিন বিড়ালকে গোসল করাতে হবে (শীতকালে নয়)।
৫। বিড়ালকে ১ বছর পরপর নিয়মিতভাবে টিকা (Vaccine) দিতে হবে। এতে করে বিভিন্ন রোগ যেমনঃ জলাতঙ্ক, Feline Calicivirus(cat flu) , Rhinotracheitis, Panleukopenia ইত্যাদি রোগ হওয়ার সম্ভবনা থাকে না।
৬। বিড়াল যদি সুস্থ থাকে এবং কামড় দেয় তাহলে সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে অ্যান্টিসেপটিক লাগাতে হবে। বিড়াল অসুস্থ থাকলে (Vet) ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নেয়া উচিৎ।
৭। বাইরের বিড়ালের সাথে মিশতে দেয়া যাবে না। Stray বিড়াল বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত থাকতে পারে। তারা যদি রোগাক্রান্ত হয় তাহলে তাদের কামড় অথবা আঁচড়ে আপনার বিড়াল রোগাক্রান্ত হতে পারে।
৮। বিড়ালকে কাঁচা মাছ এবং মাংস খেতে দেয়া যাবে না। এতে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে। সেদ্ধ করা খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে। বিশেষকরে শূকরের মাংস একদমই খাওয়ানো যাবে না।
৯। বিড়ালকে ইদুর, তেলাপোকা ইত্যাদি খেতে দেয়া যাবে না। জলাতঙ্ক রোগটি মুলত ইদুর এবং বাদুড় থেকে আসে।
১০। অনেকের ধুলা, বিড়ালের লোমে অ্যালারজি থাকে। তখন বিড়ালের সংস্পর্শে এলে হাঁচি শুরু হয়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, শরীর চুল্কায় এবং লাল হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেয়ে নিবেন।
১১। বিড়ালের লোম থেকে কোন রোগ ছড়ায় না বরং আপনার যদি হাঁপানি থাকে সেক্ষেত্রে বিড়ালের লোম নাকে গেলে আপনার সমস্যা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে বিড়ালকে আদর করার পর অবশ্যই হাত ধুয়ে নিবেন।
সেই প্রাচীনকাল থেকেই বিড়াল নিয়ে কল্প কাহিনী, কুসংস্কারের শেষ নেই। বিড়াল ঘরে পালা যাবে না, কামড় দিলে, খামচি দিলে রোগ হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আধুনিক যুগে সেই ধারনাকে ভুল প্রমান করে অনেকেই সুস্থ-স্বাভাবিক ভাবে ঘরে বিড়াল পুষছেন।
Reference:
https://www.cdc.gov/healthypets/pets/cats.html